লক্ষ্মীপুরে বন্যার অবনতি: ত্রাণ সংকটে ৭ লাখ মানুষ

 গতকাল রাতভর বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরে বন্যার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ফলে জেলায় কোথাও এক ফুট আবার কোথাও দুই ফুট পর্যন্ত পানি বেড়েছে। ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী ও ডাকাতিয়া খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে প্রবেশ করায় পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। এতে লক্ষ্মীপুরের পাঁচটি উপজেলা, চারটি পৌরসভা, এবং উপকূলের ৪০টি এলাকার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।


বন্যার কারণে জেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই, ফলে অধলক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, মান্দারী, বাঙ্গাখাঁ, এবং উত্তর জয়পুর ইউনিয়নসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কিছু এলাকায় প্রায় চার ফুট পানি জমে রয়েছে, যা জনজীবনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।

রামগতি ও কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা-হাজীগঞ্জ বেড়ির পশ্চিম পাশে ভুলুয়া নদীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ২৫ দিন ধরে বিস্তীর্ণ জনপদ পানিতে ডুবে আছে। এই জলাবদ্ধতায় রামগতি-কমলনগর ও নোয়াখালীর আন্ডারচর ও চরমটুয়া গ্রামের তিন লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশুদ্ধ পানির সংকট ও পানিবাহিত রোগবালাই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

বন্যাকবলিতদের জন্য জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো শুকনো খাবার ও চাল-ডালসহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই এখনো ত্রাণ পাননি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি, দ্রুত ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক।

এদিকে, লক্ষ্মীপুরের রামগতি আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক মোঃ সোহরাব হোসেন জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন আরও বৃষ্টি হতে পারে, ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ উজ জামান জানান, মজুচৌধুরীর হাটের স্লুইসগেটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ফেনী ও নোয়াখালীর পানি প্রবেশ করায় বন্যার অবস্থা এখনও উদ্বেগজনক।

দুঃখজনকভাবে, মিডিয়ার অপ্রতুল কভারেজের কারণে অভ্যন্তরীণ গ্রামের মানুষের দুর্দশা অনেকটাই অদৃশ্য রয়ে গেছে। মিডিয়ার উচিত শহরের পাশাপাশি ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং লক্ষ্মীপুরের অভ্যন্তরীণ গ্রামগুলোতেও ফোকাস করা, যাতে ত্রাণ কার্যক্রম আরও কার্যকর হয়।

Source : somoyerkonthosor, itvbd, Lakshmipur24.com